ফ্রেশ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি নিয়ে ভ্রান্ত ধারনাঃ
"আমি ক্যাম্পাসে ঘুরতেছিলাম। একজন ফ্যাকাল্টির সাথে দেখা। সালাম দিয়ে কথার ফাকে চাকরি নিয়ে কথা শুরু হলো। স্যার বললেন নয়ন আমি তো পাশ করার আগেই চাকরীর অফার পেয়েছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে আগেই অফার পাইতো। "
সে সময় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রচুর মূল্য ছিলো। তখন অনেক কম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বাহির হতো ও টেক্সটাইল সেক্টর স্বর্ণালী যুগ অতিক্রম করছিলো।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। প্রচুর পরিমাণে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বাহির হচ্ছে। দেশের টেক্সটাইল সেক্টর করোনা পরিস্থিতিতে খারাপ অবস্থায় পড়েছে। অনেক কোম্পানি বন্ধ হচ্ছে। অনেক কোম্পানি লোক ছাটাই করতেছে। নতুন কোনো প্রকৌশলী নিয়োগ দিচ্ছেন না। ফ্রেশারদের সার্কুলার কম।
আমার উপরের কথাগুলো বলার কারন আমি লিখছি। আমরা যারা ফ্রেশার বাহির হই তাদের এক্সপেকটেশন অনেক বেশি। আমাদের ইগো ও ডিগ্রীর ভার আমাদের অনেকটা অহংকারী করে তুলে। আমি বিশ্বাস করি আমরা অনেক বড় একটা ডিগ্রি নিচ্ছি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। আমাদের অনেক বড় জায়গায় জয়েন করার কথা অনেক ভালো স্যালারীতে এটাও ঠিক। আমি একমত।
কিন্তু আমাদের পারিপার্শ্বিক বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের বুঝতে হবে। অনেকে পাশ করে জব পাচ্ছে না। অনেকের জব চলে যাচ্ছে। অনেকেই অনেক কম বেতনে জবে ঢুকতেছে। অনেকেই ফেসবুকে নেগেটিভ মন্তব্য করতেছে।
আসল কথায় আসি, বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরীতে ঢুকায় বড় কথা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরীতে ঢুকে টিকে থাকুন। তা না হলে জবলেস থাকার চান্স বেশি থাকবে। সিনিয়রদের থেকে শুনেছি প্রথম ৩ বছর টাকার দিকে না তাকিয়ে আপনি কাজ শিখুন তাহলে ভবিষ্যতে তাড়াতাড়ি উপরে উঠতে পরবেন।
"আরে আমি তো ২৫ হাজার ছাড়া চাকরীতেই ঢুকবোনা, এই কোম্পানিতে ঢুকবোনা, এই ডিপার্টমেন্টে ঢুকবোনা। এসব বাদ দেন। যদি বলি কোম্পানি কেনো আপনাকে ২৫ হাজার টাকা শুরুতে দিবে কি উত্তর দিবেন?"
অহংকার করে কম টাকায় ঢুকবেন না। মানুষকে গালাগালি দিবেন। বলবেন মামা, চাচা নাই দেখে জব হচ্ছে না। এসব করার দিন এখন নেই৷ এখন সময় টিকে থাকার। আর সুযোগ খোজার। একটা ছোট সুযোগও ছেড়ে দেওয়া আপনাকে পস্তাতে হতে পারে। অনেক ফ্রেশাররে দেখেছি করোনা ও বিভিন্ন ইস্যুতে জব ছেড়ে দিয়ে এখন হন্যে হয়ে খুজেও জব পাচ্ছেন না। অনেক উদাহরণ আছে অনেক।
সুতরাং ফ্রেশারদের বলবো ভাই এখন ব্লেম দেবার সময় নেই। কাজে ঢুকে পড়ুন টিকে থাকুক। ইগো দেখিয়ে কম বেশি স্যালারী। এই ডিপার্টমেন্ট ভালো না ঐ ডিপার্টমেন্ট। এসব করলে জবলেস থাকার চান্স অনেক বেশি।
আমি আবার বলতেছি আপনারা আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রীধারী অনেক উচ্চ পড়াশোনা ধারী ঠিক আছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আমাদের বুঝতে হবে। দেশে আমাদের সেক্টরের কি অবস্থা তাও বুঝতে হবে। ইনশাআল্লাহ অনেক ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে, করোনা চলে যাবে তখন আমরা আমাদের ন্যায্যটা ঠিকি পাবো। কারন আমরা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম রিসোর্স।
আরেকটি বিষয় " চাচা মামা নাই বলে ফেসবুকে স্টাটাস দেওয়া আপনার ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ। চাচা মামা ছাড়াও আরেকটি বিষয় আছে সেটা হলো নেটওয়ার্কিং। চারবছর পড়াশোনা করে কোনো নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট করতে পারেন নি কেনো যদি প্রশ্ন করি তাহলে? অনেককে দেখেছি নিজেদের চৌদ্দ গুষ্টি টেক্সটাইল সেক্টরে নেই কিন্তু ইফেক্টিভ নেটওয়ার্কির এর মাধ্যমে সে ভালো কিছু করছে। "
সুতরাং নেগেটিভিটি না ছড়িয়ে। বর্তমান অবস্থা বুঝুন। সবাই সুস্থ থাকুন। আল্লাহ ভরসা।।
লেখকঃ Zobayer Hossain Noyon.
শেয়ার করতে পারেন। কপি পেষ্ট না।
Group : Textile Students Consultancy Center By Zobayer Noyon
Comments
Post a Comment